পরিচালকঃ জনাথন ডেটন, ভ্যালেরা ফেরিস

অভিনয়ঃ অ্যালান এ্যাকরিন, আবিগ্যাল ব্রেস্লিন, গ্রেগ কিনার, পল দানো, টনি কলেত
IMDB: 7.9

“A family on the verge of a breakdown, everyone just pretend to be normal”

“Hello hello, Little Miss Sunshine.
Wake up, wake up. You know you'll always be mine”.

বহুবার শোনা এই লিরিক সারা পৃথিবীতেই ভীষন জনপ্রিয়। তবে এই লিরিকের উপরে বেস করে কিন্তু “লিটল মিস সানসাইন” তৈরী করা হয় নি। সম্পূর্ণ নতুন ভাবে উপস্থাপন করা “লিটল মিস সানসাইন” কে পৃথিবীর সেরা দশ কমেডি মুভির মধ্য সবসময়ই গননা করা হয়। বাস ট্রিপ নির্ভর মুভি হলিউডে নতুন কিছু না তবে “লিটল মিস সানসাইন” একদম ভিন্ন কিছু। যুগল পরিচালক জনাথন ডেটন ও ভ্যালেরা ফেরিস (স্বামী-স্ত্রী) এর প্রথম পরিচালিত মুভি “লিটল মিস সানসাইন”। শুধু তাই না; স্ক্রিপ্ট লেখক মাইকেল আর্ন্ডের’ও প্রথম লেখা এই মুভি। প্রথম মুভিতেই বাজিমাৎ। ‘বেষ্ট অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে’ ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতে নেয় “লিটল মিস সানসাইন”। সাথে আরো একটি অস্কার আছে; ‘বেষ্ট সাপোর্টিং এ্যাক্টর হিসেবে অ্যালান এ্যাকরিন পায় এটি। এছাড়া ‘বেষ্ট পিকচার’ ও ‘বেষ্ট সাপোর্টিং এ্যাক্ট্রেস’ ক্যাটাগরিতে নমিনেশান পায় “লিটল মিস সানসাইন”। এই মুভির শুটিং শেষ হয় মাত্র ত্রিশ দিনে। বাজেট’ও ছিলো মাত্র আট মিলিয়ন অথচ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড আয় করে একশ মিলিয়নের’ও বেশি। তুমুল জনপ্রিয় এই মুভিতে খুব নামি দামি স্টারের অভাব থাকলেও তা পূরণ হয়ে গেছে অভিনয় দ্বারা। রটেন টমাটোতে ৯১% ক্রিটিক রেটিং এবং ৯২% অডিয়েন্স রেটিং সাথে মেটাক্রিটিকে ৮০ স্কোর... সবমিলিয়ে সবস্থানেই প্রশংসিত হয়েছে “লিটল মিস সানসাইন”।

খুব সাধারন একটি কাহিনীকে আরো সাধারন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুভিতে। হিউমার যাদের পছন্দের তারাই শুধুমাত্র মজা পাবেন মুভি দেখে কারন আর আট দশটা কমেডি মুভির মত ক্যারেক্টারের বোকার মত কার্যকলাপ বা অবাস্তব চিন্তাভাবনা এই মুভিতে নাই। খুব সূক্ষভাবে রসবোধ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ডায়ালগের মাধ্যমে; চরম সব উইটি ডায়ালগ আর অল্প কিছু ফানি এ্যাক্টিভিটিজ। মুভির মূল প্রোটাগনিষ্ট কে এটা বলা দুস্কর। “লিটল মিস সানসাইন” এ মোট ছয়টি চরিত্র। এদের সম্পর্কে সামান্য একটু ধারনা দেই...
শেরিল হোভার (টনি কলেত) : একজন ঘরোয়া মহিলা, পরিশ্রম যথেষ্ট করতে পারে। আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো। বর্তমানে দুই বাচ্চার মা।
রিচার্ড (গ্রেগ কিনার) : শেরিলের বর্তমান স্বামী। ক্যারিয়ার গোছানোর জন্য ব্যাস্ত। ভীষন সিরিয়াস আবার একইসাথে নুন্যতম সিরিয়াসনেস’ও নাই তার মধ্য। তার একটি হলুদ বাস আছে। ঠেলে স্টার্ট দিতে হয়।
ফ্র্যাঙ্ক (স্টিভ ক্যারেল) : শেরিলের ভাই। পুরুষদের প্রতি আগ্রহ (অন্য একটি নাম আছে এটার)। নিজেকে বিশ্বের সেরা স্কলার মনে করে। আত্মহত্যা করতে গিয়ে ব্যার্থ হয়ে শেরিলদের সাথে থাকে।
ডুয়েন (পল দানো) : শেরিলের বড় ছেলে, স্বপ্ন জেটের পাইলট হবার। যতদিন তার স্বপ্ন পূরন হবে না ততদিন কথা না বলে থাকবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আজ নয় মাস সে কোনো কথা বলে না।
এডুইন (অ্যালান এ্যাকরিন) : রিচার্ডের বাবা। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সৈন্য ছিলো। নেশা করার জন্য চাকরী ছেড়ে দায়। অকথ্য ভাষায় কথা বলতে ওস্তাদ।
অলিভ (আবিগ্যাল ব্রেস্লিন) : শেরিলের ছোট্ট মেয়ে। তার স্বপ্ন লিটল মিস সানসাইন প্রতিযোগিতে চ্যাম্পিওন হওয়া। সবকিছুতেই বেশী আগ্রহ।
এই ছয়জন একসাথে আটশ মাইল পাড়ি দেবে হলুদ ভক্সওয়াগন বাসে চড়ে। তাদের গন্তব্য ক্যালিফোর্নিয়া যেখানে ছোটদের সুন্দরি প্রতিযোগিতে ‘লিটল মিস সানসাইন’ হবে।  যাত্রার শুরু থেকেই একের পর এক মজার কার্যকলাপ... ডায়ালগগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলে হাসি ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন না।

অভিনয়ের কথা বলতে গেলে অলিভ চরিত্রে অভিনয় করা আবিগ্যাল ব্রেস্লিনের কথা বিশেষভাবে বলব। ছোট্ট অলিভের যে ইমোশান সেটা অসাধারন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে এই মেয়েটি। আর অ্যালান এ্যাকরিনের অস্কার পাওয়াটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। স্টিভ ক্যারেল এর উদাসীনতাও যথেষ্ট বিনোদনের খোরাক জোটাবে। আরেকটি বিষয়, মুভির সাউন্ডট্র্যাক আলাদা করে শুনে দেখুন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আর সাথে লং রোড জার্নি; বেশ চমৎকার কম্বিনেশান পেয়েছি এই মুভিতে। নিউ ইয়র্ক টাইমস্‌ এর মতে “লিটল মিস সানসাইন” সেরা হলিডে মুভিগুলোর মধ্য একটি। বিখ্যাত ‘পেষ্ট’ ম্যাগাজিন এই মুভিকে গত দশকের বিশ্বের সেরা মুভিগুলোর মধ্য ৩৪ তম স্থানে রেখেছেন।। তো ঘুরে আসুন হলুদ বাসে চড়ে... তাদের সাথে মজার মজার কাজে সামিল হয়ে যান; দেখে ফেলুন “লিটল মিস সানসাইন”।

 
পরিচালকঃ মার্ক ফ্রষ্টার

অভিনয়ঃ জনি ডেপ, কেট উইন্সলেট, রাধা মিশেল, ডাস্টিন হফম্যান।
IMDB: 7.7

"Unlock Your Imagination..."

স্যার জেমস ম্যাথিও ব্যারি নামটা কি খুব পরিচিত মনে হচ্ছে? অনেকের’ই হবার কথা। যারা জানেন না তাদের বলছি এই মানুষটা বিশ্ববিখ্যাত চরিত্র পিটার প্যানের স্রষ্ঠা। পিটার প্যানকে মনে আছে তো? ওই যে, সেই চিরসতেজ মিষ্টেরিয়াস বালক; নেভারল্যান্ডে উড়ে বেড়ায়। যাই হোক; “ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড” স্যার জেমস ম্যাথিও ব্যারির’ই সেমি- অটোবায়োগ্রাফি। মার্ক ফ্রষ্টারের পরিচালিত মুভিটি অ্যালান নি রচিত “দ্যা ম্যান হু ওয়াজ পিটার প্যান” বই অবলম্বনে করা। জে, ব্যারির ভুমিকাতে আছেন ওয়ান এ্যান্ড অনলি জনি ডেপ। এছাড়া সিলভিয়া ডেভিডস্‌ ও চার্লস ফ্রোম্যানের এর ভুমিকায় যথাক্রমে কেট উইন্সলেট এবং ডাস্টিন হফম্যান অভিনয় করেছেন। অস্কারে সাতটি শাখাতে নমিনেশান পেলেও ‘বেষ্ট অরিজিনাল স্কোর’ শাখাতেই শুধুমাত্র পুরষ্কার পায় এই মুভি। “ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড” এ প্রথমেই যেটা চোখে পরবে সেটা হলো অসাধারন সিনেমাটোগ্রাফী; আর সাথে যুক্ত হয়েছে কাজমার্কের আবহ সঙ্গিত যা আপনাকে নেভারল্যান্ডের কল্পনার জগতে নিয়ে যাবে।

জেমস ব্যারির সাথে পিতৃহারা চার শিশু এবং তাদের মা’এর সাথে সম্পর্ককে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে মুভির মূল কাহিনী। এই পরিবার’ই ব্যারির উপরে পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে পিটার প্যান সৃষ্টিতে। মুভির কাহিনী মোটেও বলা যাবে না। স্প্যলার  হয়ে যাবে। তারপরেও ছোট্ট করে বলি -  “লিটল ম্যারি” নাটকের ব্যার্থতার পরে নাট্যকার জেমস ব্যারি স্বভাবতই ভেঙ্গে পরে। এই সময় তার পরিচয় হয় বিপত্নীক সিলভিয়ার সাথে। কিংস্টোন গার্ডেনে সিলভিয়ার চার সন্তানের সাথে গভীর বন্ধুত্ত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে জেমস এর; বিশেষ করে ছোট্ট পিটার ডেভিস এর সাথে। তাদের ইনোসেন্স দেখেই জেমস এর মধ্যে প্রথম একটা চিন্তার উদয় হয়; ‘যদি বাচ্চাগুলো এমন’ই থাকত সারাজীবন, যদি তাদের বয়স না বাড়ত’। ওপরদিকে ব্যাক্তিগত জীবনে জেমস এর নানান ঝামেলা শুরু হয়। এইসময় এগিয়ে আসে চার্লস ফ্রোম্যান; তাকে সুযোগ দেয় তার মঞ্চে কাজ করবার। সৃষ্টি হয় পিটার প্যানের। কিন্তু জেমস ও সিলভিয়ার সম্পর্কের কি হবে? বাচ্চাগুলোকে কি সে হারাবে? শেষ অবধি কে সত্যিকারের নেভারল্যান্ডে যেতে পারবে?

জনি ডেপের অভিনয় সম্পর্কে বলার কিছু নাই। বরাবরের মতই অসাধারন। বেস্ট এ্যাক্টর হিসেবে নমিনেশান ও পেয়েছিলেন। কেট উইন্সলেটও তার অভিনয় দক্ষতার পূর্ণ পরিচয় রেখেছেন এই মুভিতে। পরিপুর্ণ তৃপ্তি পাবেন মুভি শেষ হলে। এটা কোনো ফ্যান্টাসি মুভি নয়; মনের কল্পনাকে বাস্তবতাতে রুপদান করার মুভি “ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড”। জেমস এর সাথে ছোট্ট পিটারের একই সাথে বন্ধুত্ত্বপূর্ণ এবং পিতৃসূলভ সম্পর্ক মনের গভীরে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে। না দেখে থাকলে দেখুন মুভিটা; কল্পনার জগৎ কে নতুন করে দেখতে শিখবেন।


"gently seductive, genuinely tender and often moving without being maudlin" and added, "Depp and Winslet share a rare combination of airiness, earthiness and sharp, wry intelligence."

(Los Angeles Times)