পরিচালকঃ কার্স্টেন শেরীডন

অভিনয়ঃ ফ্রেডি হাইমোর, কেরী রাসেল, জনাথন মেয়ার, রবিন উইলিয়ামস।
IMDB: 7.4

“An incredible journey moving at the speed of sound”

“চার্লি এ্যন্ড দ্যা চকলেট ফ্যাক্টরি” এবং “ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড” মুভি দু’টোতে জনি ডেপ থাকা সত্ত্বেও সবার নজর কাড়তে বাধ্য করেছিলো যে বাচ্চা ছেলেটি সেই ফ্রেডি হাইমোর কে পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। মুভি নিয়ে কথা না বলে তার অভিনয় নিয়ে কথা বললেই বোধহয় বেশী ভালো হবে। স্বভাবতই “অগাষ্ট রাশ” মুভিতেও তার প্রতি চোখ ছিলো সবার এবং কাউকে সে নিরাশও করেনি; জন্মগত অভিনয় প্রতিভা দিয়ে মন জয় করে নিয়েছে সে সবার। এত্তটুকুনকালে এত্ত এত্ত সুন্দর অভিনয় করে কিভাবে এইটা মুভি দেখার সময়ে বার বার ভেবেছি আমি। এই মুভিকে ড্রামা বলা যায়; বলা যায় ফেয়রি টেইল; সব হারিয়ে নিঃস্ব হবার মুভি এটি আবার সব ফিরে পাবার মুভি। কার্স্টেন শেরীডন পরিচালিত এই মুভিতে আরেকটি বিষয় আমার অসাধারন লেগেছে – এই মুভির মিউজিক। মুভির ‘রাইজ ইট আপ’ গানটা ‘বেষ্ট অরিজিনাল সং’ ক্যাটাগরিতে ৮০ তম অস্কারে নমিনেশানও পেয়েছিলো। এছাড়া মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক’ও সবার হৃদয় কাড়তে বাধ্য।

মুভির প্রথমেই আমরা দেখতে পাই ইভান টেইলর (ফ্রেডি হাইমোর) নামের ছোট্ট এক ছেলেকে। এতিমখানাতে বাস করে, জানে তার মা- বাবা কেউ নাই। তারপরও সে তার মা- বাবার কথাই চিন্তা করে আর ভাবে একদিন না একদিন সে তাদের ফিরে পাবে। তার চিন্তার  মাঝেই ফ্ল্যাশব্যাকে আমরা চলে যাই ১৯৯৫ এর ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কে। আমাদের সমনে আসে বাবার চাপের বশে অর্কেস্ট্রা বাদক বনে যাওয়া লাইলা নোভাচেক (কেরী রাসেল) এবং আইরিশ রক ব্যন্ড ‘দ্যা কনেলি ব্রাদার্স’ এর লিড ভোকালিষ্ট লুইস কানেলি (জনাথন মেয়ার )। মুহুর্তের পরিচয়ে তাদের ভালোবাসা পূর্নতা পায়। মুভির এই অংশটুকু আমাকে যথেষ্ট অবাক করে যা তারা পরেরদিন সকালে দ্রুত একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নেয়। লায়লা শিকাগোর পথে রওনা হয়; লুইস তার মিউজিকে ফিরে যায়। লাইলা আবিষ্কার করে তার শরীরে আরেকটি নতুন প্রানের জন্ম হয়েছে। বাবার সাথে ঝগরা করে রাস্তাতে নামে লুইসকে খোজার জন্য এবং দূর্ঘটনার শিকার হয়। অপ্রাপ্ত অবস্থাতে বাচ্চা প্রসব করলে তার বাবা অগোচরে বাচ্চাটিকে এতিমখানাতে দিয়ে দেয় এবং লাইলাকে বোঝায় তার বাচ্চা মারা গেছে। খুব বেশি দ্রুত ঘটে যায় ঘটনাগুলো।

এবার এগার বছর পরে ফিরে আসা যাক। ইভানকে দেখা যায় রিচার্ড জেফার্স নামের এক স্যোসাল ওয়ার্কারের সাথে নিউ ইয়র্কে আসতে যেখানে সে হারিয়ে যায়। কালক্রমে উইজার্ড (রবিন উইলিয়ামস) নামে পরিচিত এক লোকের হাতে এসে পরে যে গৃহহীন শিশুদের মিউজিক শেখায় এবং তাদের ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করে। এখানেই ইভানের গড-গিফটেড মিউজিক ক্ষমতার পরিচয় মিলে। অপরদিকে লাইলার বাবা মৃত্যুশয্যায় লাইলাকে বলে তার সন্তানের বেচে থাকার কথা। শুরু হয় খোজ, শুরু হয় নাটকিয়তা। উইজার্ড ছাড়তে রাজি হয়না ইভানকে, লাইলা জানে তার সন্তানের বেঁচে থাকার কথা কিন্তু তার চেহারা কেমন সে জানে না। এর মাঝে লুইসও নিউ ইয়র্কে আসে লাইলার খোজে। তাহলে কিভাবে তারা একত্রিত হবে? চট করে দেখে ফেলুন মুভিটা।



একান্তই ব্যক্তিগতভাবে মুভির চিত্রনাট্য কিছুটা ম্লান মনে হয়েছে আমার। খুব বেশী কোইন্সিডেন্স। তবে ফ্রেডি হাইমোরের অভিনয়ের জন্য হলেও মুভিটা দেখা উচিত, তার যে ফেসিয়াল এক্সপ্রেশান্স তা কোনো স্ক্রিন রাইটারের পক্ষে সম্ভব না লেখার। ক্লাসিক, রক আর স্ট্রিট মিউজিকের সংমিশ্রনও অসাধারন। কেরী রাসেলের অভিনয় মানসম্পন্ন; এক্ষেত্রে জনাথন মেয়ার যথেষ্ট পিছিয়ে বলেই আমি মনে করি। আর রবিন উইলিয়ামস কে নিয়ে কথা বলার সাহস আমার নেই।

“অগাষ্ট রাশ” সবার জন্য না। কিন্তু আপনি যদি সঙ্গিত শিল্পানুরাগী এবং কবিতাপ্রিয় হন এবং অবশ্যই যদি ভাবপ্রবন গল্পের কাছে আত্মসমর্পন করতে পছন্দ করেন তবে অবশ্যই এটি আপনার মনে দাগ কেটে যাবে”। (ইউ,এস,এ ট্যুডে)