পরিচালকঃ নেইল ব্লোমক্যাম্প

অভিনয়ঃ ম্যাট ডেমন, জোডি ফস্টার।
IMDB: 6.8


"They are armed and I'd like them dead!"

২১৫৪ সালটা পৃথিবীর জন্যে মনে হয় যথেষ্ট গুরুত্ত্বপূর্ণ কারন ২০০৯ সালে জেমস ক্যামেরনের “এভাটার” এর পরে ২০১৩ সালে নেইল ব্লোমক্যাম্পের “এলিজিয়াম” মুভির কাহিনী’ও গড়ে উঠেছে এই সালকে ঘিরে। পার্ফেক্ট ওয়ার্ল্ড বা কল্পলোকের স্বপ্ন দেখছে মানুষ সেই আদিম কাল থেকে। এলিজিয়াম হলো সেই পার্ফেক্ট ওয়ার্ল্ড। ক্ষুধার জন্য হাহাকার নাই, নাই দারিদ্রতা। সবাই খুশিতে দিন কাটায় ওখানে। কিন্তু সমস্যা হলো ওটা আমাদের এই মাটির পৃথিবী না। এলিজিয়াম কৃত্তিমভাবে বানানো এক বিশাল এক মহাকাশ স্টেশানের মত। পৃথিবী থেকে যে কারো ওখানে যাওয়ার উপায় নাই; শুধুমাত্র অর্থ বিত্তে সচ্ছলদের জন্য ওই দুনিয়া। রোগ বালাই থেকে সম্পুর্ণ মুক্ত ওই স্পেস হ্যাবিট্যাটে যেতে টিকেট লাগে। মোদ্দা কথা মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত। পৃথিবীর বুকে বাস করে মৃতপ্রায় মানব গোষ্টি। আর এলিজিয়ামে বিত্তশালীরা। পৃথিবীর অসহায় মানুষদের জন্য এলিজিয়াম স্বর্গ সমতুল্য। তারা বার বার চেষ্টা করে নিজেদের তৈরী জরাজীর্ন স্পেসশীপে করে এলিজিয়ামে যেতে; বারবার ব্যার্থ হয়। উচ্চভিলাসী মানুষদের তৈরী এই কল্পলোকের দায়িত্ত্বে আছে নুন্যতম মানবিকবোধহীন কিছু মানুষ। 

ম্যাক্স (ম্যাট ডেমন) ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা পৃথিবীতে রোবট তৈরীর কারখানাতে কাজ করে। সম্পূর্ণ পৃথিবী রোবট দ্বারা পরিচালিত হয়। রোগে ভরে গিয়েছে গোটা দুনিয়া। অথচ এলিজিয়ামে রোগ বলতে কিচ্ছু নাই কারন তাদের মেড-বেইজ বলে একপ্রকার মেডিক্যাল ডিভাইস আছে যা তাদের রোগ জীবানু থেকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়। ম্যাক্স কারখানাতে কাজ করার পূর্বে দূর্ধষগাড়ি চোর ছিলো। একদিন এই কারখানাতে কাজ করার সময়’ই সে মাত্রারিক্ত রেডিয়েশানের মধ্যে পরে এবং তার জীবন ওলট পালট হয়ে যায়। তাকে মাত্র পাঁচ দিন সময় দেয়া হয় বেঁচে থাকার জন্যে। তার এলিজিয়ামে যাবার স্বপ্ন ভোঁতা হয়ে যায়।

ম্যাক্স কি করবে এখন? মাত্র পাঁচদিন আয়ু তার হাতে। পৃথিবীতে চিকিৎসা সম্ভব না। একমাত্র সম্বল মেড-বেইজ কিন্তু ওটা তো এলিজিয়ামে। ওখানে সে যাবে কিভাবে? আর গেলেই বা বেঁচে থকবে কিভাবে? সমস্ত শহর পাহারা দিচ্ছে ভীষন শক্তিসম্পন্ন রোবট। আর তার সাথে আছে ডেলাকোর্ট (জোডি ফস্টার) এর কূটিল বুদ্ধি... সুযোগ সন্ধানী স্পাইডারের সাহায্যে ম্যাক্সের শরিরে বসানো হয় এক্সো স্কেলিটন। শুরু হয় তার বেঁচে থাকার সংগ্রাম। পারবে কি ম্যাক্স নিজেকে বাচাঁতে? পারবে কি পৃথিবীর রোগাক্রান্ত মৃতপ্রায় মানুষগুলোকে মেড-বেইজে নিয়ে যেতে? জানতে হলে দ্রুত ঘুরে আসুন কল্পনার রাজ্য এলিজিয়াম থেকে।

সায়েন্স ফিকশান লাভারদের কাছে প্রথম থেকেই লোভনীয় ছিলো “এলিজিয়াম”। কিন্তু মুক্তির পরে সাধারন দর্শক টানটেও সক্ষম হয় মুভিটি। দূর্দান্ত এ্যাকশানে ভরপুর মুভিটি বিনোদনের খোরাক হিসেবে দেখলেই ভালো করবেন। ম্যাট ডেমন বরাবরের মতই চমৎকার অভিনয় করেছেন। কিন্তু জুডি ফস্টারের অভিনয় তার অন্য যেকোনো মুভির চাইতে কম শক্তিসম্পন্ন বলেই মনে হয়েছে আমার। বছরের অন্যতম ব্যায়বহুল মুভি “এলিজিয়াম” অন্য দশটা সায়েন্স ফিকশান থেকে যথেষ্টই ভিন্ন। সুতরাং, দেরি না করে দেখে ফেলুন মুভিটি।