পরিচালকঃ জ্যা-পিয়েরে জ্যুয়েট

অভিনয়ঃ আড্রে টাতাও, ম্যাথিউ ক্যাজোভিটস, রাফুস।
IMDB: 8.4

"She Will Change Your Life..."

‘লা ফ্যাবুলিউক্স ডেস্টিন দ্য’অ্যামেলি পলেইন’; ফ্রেঞ্চ উচ্চারন করতে যাদের সমস্যা তারা অনায়াসে এই মুভিকে “অ্যামেলি” বলে ডাকতে পারেন। আগেই বলে রাখি, অ্যামেলি কোনো টাইম পাসিং টাইপের মুভি না বা কোনো থ্রিলিং এক্সপেরিয়েন্সও কাজ করবে না আপনার মধ্যে। এই মুভি দেখতে হলে আপনাকে মুভির মেকিং বুঝতে হবে, মুভিকে ভালোবাসতে হবে। শুধু মুভি ভালোবাসলেই হবে না, সাথে ভালোবাসতে হবে হিউমার, ভালোবাসতে হবে আইরনি এবং এক্সট্রিম ইমোশান। আমার লাইফে দেখা সেরা দশটা মুভির মধ্যে এই মুভির নাম উপরের দিকেই থাকবে। কি নাই এই মুভিতে বলুনতো? আর্ট ডিরেক্সান, সিনেমাটোগ্রাফি, স্ক্রিন প্লে, সাউন্ড ইফেক্ট সব বিশ্বসেরা মানের। পাঁচটা শাখায় অস্কারে নমিনেশান পায় এই মুভি; কিন্তু দুঃখের বিষয় যুদ্ধে হেরে যায়  “আ বিউটিফুল মাইন্ড” ও “দ্যা লর্ড অফ দ্যা রিংস” এর কাছে। এই মুভির দৃশ্যায়ন সম্পর্কে নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত ক্রিটিক রেভারহোপ তো বলেই বসেন “এত বেশী সুন্দর দৃশ্যায়ন এই মুভিতে যে মাঝে মাঝে বোরিং হয়ে গিয়েছি”। তাহলে বুঝে নিন সত্যিকারের মুভি লাভারদের জন্য কতটা লোভনীয় এই “লা ফ্যাবুলিউক্স ডেস্টিন দ্য’অ্যামেলি পলেইন”...

ফ্রেঞ্চ পরিচালক জ্যা-পিয়েরে জ্যুয়েট ও আড্রে টাতাও জুটির প্রথম মুভি “অ্যামেলি”। এই জুটির দ্বিতীয় মুভি “আ ভেরি লং এঙ্গেজমেন্ট” নিয়ে আগেই ছোট্ট করে লিখেছি আমি। “অ্যামেলি” মুভির সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট হল প্রতিটি ক্যারেক্টারের অসাধারন অভিনয়। নিঃসন্দেহে টাতাও তার জীবনের সেরা অভিনয় করে ফেলেছে এই মুভিতে। “অ্যামেলি” মুভিতে আপনি না পাবেন দুর্দান্ত রোমান্স, না পাবেন শাষরুদ্ধকর এ্যাকশান। নাই কোনো গোলাগুলির শব্দ, অথবা টানটান উত্তেজনা। এই মুভিকে রোমান্টিক কমেডি বলা হলেও এর কমেডি আর অন্য যেকোন কমেডির মধ্য বহু পার্থক্য আছে। জ্যা-পিয়েরে জ্যুয়েট কমেডির সংজ্ঞা নতুন করে চিনিয়েছেন আমাদের সামনে। অট্টহাসি বদলে নিজের অজান্তেই ঠোটের কোনে ফুটে উঠবে এক চিলতে মুচকি হাসি। এই মুভির কাহিনী আসলে বলার কিছু নাই; যারা দেখেন নি তারা দেখলেই বুঝতে পারবেন। তারপরেও আমি কিছুটা ধারনা দেই...

মুভিতে পাবেন আন্ড্রে দ্যুসেলিয়ারের দুর্দান্ত ন্যারেশান যা পুরো মুভি জুরেই আছে। শূরু থেকেই হিউমারের ছড়াছড়ি। প্রথমে অ্যামেলিকে আমরা পাই ছোট্ট একটা মেয়ে হিসেবে যার খেলার সাথী কেউ নাই। তার বাবা এবং মা’কে নিয়ে যথেষ্ট মক করা হয়। কোনো মানুষের মারা যাবার দৃশ্য যে হাসির উদ্দ্রেগ ঘটাতে পারে তা তার মা’এর মারা যাওয়া দেখে বোঝা যায়।  অন্য এক মহিলে আত্মহত্যা করে উচু বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ে; পরবি তো পর একেবারে অ্যামেলির মা’এর ঘাড়ে। চিৎপটাং। এরপর শুরু হয় অ্যামেলির জগৎ। বড় হয়ে তাকে দেখি প্যারিসের এক ক্যাফের ওয়েট্রেস হিসেবে। রোমান্স বা সেক্সে সে কোনো আনন্দ পায় না। নিজের মত থাকে, মানুষকে তীক্ষ্ণভাবে লক্ষ করে। মোটকথা তার নিজের ভূবন। পিন্সেস ডায়নার শেষ সমাধির দৃশ্য তার মনে এক বড় পরিবর্তন আনে। কালক্রমে খুজে পায় পঞ্চাশ বছর আগে লুকোনো একটা বক্স যার মধ্যে ছোট বাচ্চাদের খেলনা। খুজতে শুরু করে এক মালিককে। এভাবে কাহিনী এগুতে থাকে। অ্যামেলির দুষ্টামি আর তার পোষ্ট ইফেক্ট মজা দেবে যে কাউকে। মাঝে আসে ক্রিষ্টাল ম্যন, বরদোতু, জিনা, জর্জেট আর আসে নিনো যার হবি মানুষের ফেলে দেওয়া পাসপোর্ট সাইজের ছবি কালেকশান করা। বোঝায় যাচ্ছে অ্যামেলি আর নিনোর মধ্যে কিছু একটা হবে। কিন্তু কিভাবে কি হবে? এভাবে বললে আসলে হবে না... দেখতে হবে মুভিটা।

এই মুভির মেকিং নিয়ে কথা বলা উচিত হবে কি না বুঝতেছিনা। শুধু বলা যায় মুগ্ধ হতেই হবে; এতটাই অসাধারন। টাতাও স্থানে অন্য কাউকে অ্যামেলি চরিত্রে চিন্তাই করা যায় না; এতটাই জীবন্ত ছিলো সে এই চরিত্রে। আর সাথে মন ভোলানো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। এই মুভি দেখার পরে কিছু দর্শকের মন্তব্য তুলে ধরার লোভ সামলাতে পারছি না... J



“Do I look like Amelie?”



“I went to Paris after seeing this movie”

“The Movie is delicious enough to bite a bit more...”