পরিচালকঃ অ্যান্টোইন ফুকুয়া

অভিনয়ঃ জেরার্ড বাটলার, আরন একহার্ট, মর্গান ফ্রিম্যান,

IMDB: 6.4

“When our flag falls our nation will rise”

“পি,এস আই লাভ ইউ” এবং “থ্রি হান্ড্রেড” মুভিতে অনবদ্য অভিনয় করা জেরার্ড বাটলার এর সাথে মর্গান ফ্রি ম্যান... অনেক বেশী প্রত্যাশা নিয়ে মুভিটা দেখতে বসলেও যথেষ্ট হতাশ হতে হয়েছে দেখা শেষে। তবে এটা ঠিক, বিনোদনের কথা আসলে বলতেই হয় এই মুভির ধাপ ধুপ এ্যাকশান পুর্নমাত্রায় বিনোদন দিতে সক্ষম। ওয়ান ম্যান শো বলে একটা কথা আছে যা আপনি এই মুভিতে পুরোদমে প্রত্যক্ষ করবেন। সত্যি কথা বলতে কি এই মুভিতে হোয়াইট হাউজ তথা পুরো আমেরিকার সিকিউরিটি সিস্টেম এতটাই ডাল-ভাত  দেখিয়েছে যে মাঝে মাঝে মনে হয়েছে এটার স্ক্রিপ রাইটার হলিউডের না... তামিল মুভির কেউ হবে হয়ত। বানিজ্যিক মুভি; একবার দেখে ভূলে যাবেন এটা নিশ্চিত থাকেন। তবে ওই যে বললাম... এ্যাকশান মুভি প্রিয় মানুষদের বেশ কিছুক্ষন সময় বিনোদনে কাটবে।

“অলিম্পাস হ্যাজ ফলেন” মুভিতে আপত্তি তোলা যেতে পারে আরন একহার্টের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিনয় করা। অন্যদের কাছে কেমন লেগেছে জানি না, আমার কাছে মোটেও তার এই চরিত্রায়নে পছন্দ হয় নি। একেবারে ফ্লাট মোশান, বয়সেও বেমানান। জেরার্ড বাটলারকে দেখেও অবাক হয়েছি। ফিগার হয়েছে বটে... দেখার মত। যাই হোক, এবার মূল মুভিতে আসি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্পেশাল সিক্রেট এজেন্ট মাইক ব্যানিং (জেরার্ড বাটলার) নিজ দায়িত্ত্বে থাকাকালিন অবস্থাতেই ফার্স্ট লেডি মার্গারেট (এ্যাশলে জাড) মারা যায়। প্রচন্ড তুষারাচ্ছন্ন এক রাতে সম্পূর্ণ পরিবার নিয়ে পূর্ণ প্রোটোকলে ক্যাম্প ডেভিডের উদ্দেশ্যে রওনা হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন এশার (আরন একহার্ট)। কিন্তু পথে একটি গাছ ভেঙ্গে গাড়ি বহরের উপরে পরে এবং প্রেসিডেন্টের গাড়ি ব্রিজ ভেঙ্গে ঝুলে থাকে। মাইক ব্যানিং প্রেসিডেন্টকে বাঁচাতে সক্ষম হলেও মারা যায় ফার্স্ট লেডি। ফলস্রুতিতে তাকে প্রেসিডেন্সিয়াল ডিটেইল থেকে বরখাস্ত করে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টে দেওয়া হয়;  প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন এশার এর সাথেও তার সম্পর্ক নষ্ট হয়। এভাবেই আঠারো মাস কেটে যায়।

অন্য দশটা দিনের মতই দিনটা শুরু হয় প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন এশার এর। আজ তার বিশেষ বৈঠক দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান মন্ত্রি লি তায় উ এর সাথে।  বৈঠক শুরু হতে না হতেই একটি কোরীয় বিমান আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে হোয়াইট হাউজের বিপদ সীমার মধ্যে ঢুকে পরে। হোয়াইট হাউজের আরেক নাম’ই হলো ‘অলিম্পাস’। মার্কিন নিরাপত্তা ব্যাবস্থা যে এতটা নাজুক তা বোধহয় এই মুভি দেখার আগে জানতেই পারতাম না (!)। কিছুক্ষনের মধ্যেই হোয়াইট হাউজের দখল নিয়ে নেয় উত্তর কোরিয়ার এক উগ্রবাদি সন্ত্রাস গ্রুপ যাদের প্রধান ক্যাং ইয়েন্স্যাক; সাথে জিম্মি করে প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ সব হোমরা চোমরা মানুষকে। হোয়াইট হাউজের ভিতরে আটকা পরে প্রেসিডেন্টের ছেলে আর মাইক। অস্থায়ি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন স্পিকার অ্যালান ট্রামবুল (মর্গান ফ্রিম্যান)। শুরু হয় খেলা। সাথে যুক্ত হয় সার্ভার কোডের মাধ্যমে পুরো আমেরিকা উরিয়ে দেয়ার হুমকি। মাইকের কাধে এসে পরে অনেক বড় দায়িত্ব। প্রেসিডেন্টকে এবং তার ছেলেকে বাচানো; সাথে গোটা আমেরিকা... মাইক কি পারবে বাঁচাতে? সেটা বলে আমি আগেই মজা নষ্ট না করি...

বছরের অন্যতম ব্যাবসা সফল মুভি “অলিম্পাস হ্যাজ ফলেন”। এই মুভিকে যথেষ্ট প্রতিযোগিতার মুখে পরতে হয় কারন একই বছরে “হোয়াইট হাউজ ডাউন” নামের এই একই থিমের উপরে আরেকটি মুভি নির্মিত হয়। “অলিম্পাস হ্যাজ ফলেন” মুক্তি পাবার পরে পুরো পৃথিবীতেই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই মুভির চিত্রনাট্য জঙ্গিদের উষ্কে দেবে বলে মনে করেছেন অনেক ক্রিটিক। সিক্যুয়াল বানানোর কাজ শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই; নাম “লন্ডন হ্যাজ ফলেন”। ডিরেক্টর হিসেবে অ্যান্টোইন ফুকুয়া বদলে অন্য কেউ আসবে বলে মিলেনিয়াম স্টুডিও থেকে জানানো হয়েছে। দেখে নিতে পারেন মুভিটা; অন্তত পুরো সময়ে যথেষ্ট বিনোদন পাবেন এটা নিশ্চিত থাকেন।




Leave a Reply.