পরিচালকঃ জন ম্যাডেন

অভিনয়ঃ গিনেথ প্যলট্র, জোসেফ ফিয়েন্স, জিওফ্রে রাস
IMDB: 7.2

“You are my dream; you are my nightmare too…”

১৯৯৮ সাল মুভি ক্রিটিকদের জন্য নিঃসন্দেহে ভীষন কষ্টকর ছিলো সেরা মুভি বেছে নেয়ার জন্য। “এলিজাবেথ”, “শেক্সপিয়ার ইন লাভ”, “লাইফ ইজ বিউটিফুল”, “সেভিং প্রাইভেট রেন”, “দ্যা থিন রেড লাইন”, “আমেরিকান হিষ্টরি এক্স”... কি এক এক টা মুভি। এদের মধ্য সেরা বাছা যে কতটা কষ্টকর তা জুরিবোর্ড ভালোমতই বুঝেছে যদিও আমাদের মত আমজনতার জন্য এটা শাপে বর হয়েছে। কিন্তু স্বয়ং শেক্সপিয়ার’ই হাজির, সেখানে অন্য কারো দাম থাকার কথা না। ফলে যা হবার - সব মুভিকে পেছনে ফেলে অস্কার জিতে নেয় জন ম্যাডেনের রোমান্টিক কমেডি “শেক্সপিয়ার ইন লাভ”। সমস্যা হলো অনেক সমালোচকের মতেই এই মুভির অস্কার পাওয়া ঠিক হয়নি। কার কেমন লেগেছে জানি না, আমার কিন্তু ভীষন পছন্দের মুভি। এক একটা ডায়ালগ মনে দাগ কেটে যায়। এটাকে ঠিক কমেডি মুভি বলা উচিত না কারন স্যাটায়ারগুলা সিরিয়াস টাইপের। মার্ক নরম্যন এবং টম স্টপার্ড তাদের মেধার সম্পুর্ণ ঢেলে দিয়েছেন এই মুভির স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য। উইলিয়াম  শেক্সপিয়ার এর ভূমিকাতে ভালোভাবেই উতরে গেছেন জোসেফ ফিয়েন্স শুধুমাত্র তার অভিনয় দক্ষতার বশে। আর গিনেথ প্যলট্র তো একেবারে অস্কার’ই জিতে ফেলেছেন ভায়োলা চরিত্রে অভিনয় করে।

১৫৯৩ সালের লন্ডন। রোজ থিয়েটারের মালিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ার (জোসেফ ফিয়েন্স) “রোমিও এ্যন্ড এথেল; আ পাইরেটস্‌ ডটার” নামের একটা নতুন কমেডি লেখার সময় রাইটার্স ব্লকে ভুগতে থাকে। নাটকে অভিনয়ের জন্য অডিশান শুরু হলে থমাস কেন্ট নামের একজনকে তার পছন্দ হয়ে যায় মূল চরিত্রের জন্য। এই থমাস কেন্ট’ই হলো ছদ্মবেশে থাকা ভায়োলা (গিনেথ প্যলট্র) । যারা শেক্সপিয়ারের রচনার সাথে পরিচিত তাদের ভালই জানার কথা তার নাটকের মধ্য ছদ্মবেশ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ; আর সে সময় স্টেজে মেয়েদের অভিনয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। খুব বেশি সময় লাগে না উইলিয়ামের কাছে তার প্রকৃত পরিচয় উন্মোচন হতে; ভালোবাসা জন্মাতেও দেরী হয় না। ভায়োলার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে কলম চলতে শুরু হয় শেক্সপিয়ারের। “রোমিও এ্যন্ড এথেল” নাম বদলে যায় “রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট” এ। পর্দাতে আমরা দেখতে পাই সেই সময়ের আরেক বিখ্যাত নাট্যকার ক্রিস্টোফার মার্লোকে। তার “ডক্টর ফস্টাস” এর কথা বারবার আসে।

যাই হোক, এত সুখ চলতে থাকলে তো হতোই, ফাটল দেখা দেয় ভালোবাসাতে। উইলিয়াম আগেই বিবাহিত ছিলো, বউ এর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বহু বছর আগে। এদিকে আবার ভায়োলার পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক করে বিশাল জমিদার লর্ড ওয়েসেক্স এর সাথে। রানী এলিজাবেথের মঞ্চ সম্পর্কিয় দূত এডমান্ড টিলনে জানতে পারে রোজ থিয়েটারে একজন মেয়ে অভিনয় করছে। রোজ থিয়েটার বন্ধ করে দেওয়া হয়; “রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট” এর ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পরে। শেষ অবধি উপায়ন্তর না দেখে রিচার্ড বারবেজ এর থিয়েটারে নাটক মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয় শেক্সপিয়ার। শেক্সপিয়ার নিজে অভিনয় করবে রোমিও চরিত্রে, আর জুলিয়েট চরিত্রে মঞ্চের আরেকটা ছেলে। ভায়োলা জানতে পারে তার বিয়ের দিন এই নাটক মঞ্চস্থ হবে। চারিদিকে কঠোর নিরাপত্তা, এর মাঝে কি ভায়োলা পারবে নাটক শুরু হবার আগে মঞ্চে আসতে? এই প্রশ্নের উত্তর আমি নাহয় নাই বা দিলাম। তবে মুভি দেখার সময় এর ডায়ালগগুলো খেয়াল করবেন; ভালো লাগতে বাধ্য।  এই মুভিতে বেন এ্যফ্লেকের ভক্তরা কিছু সময়ের জন্য হলেও তাকে পাবেন।

সাতটা অস্কার জেতা চট্টিখানি কথা নয়, তাও আবার তেরোটি শাখাতে নমিনেশান পেয়ে। এই মুভিতে ভালোলাগা অনেক ডায়ালগ আছে, সব দেয়া সম্ভব নয়। দু’একটা তুলে ধরলামঃ

“My lady, the tide waits for no man, but I swear it would wait for you..”

“You will never age for me, nor fade, nor die.”

“Love knows nothing of rank or river bank.”

“As stories must when love's denied: with tears and a journey.”




Leave a Reply.